এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন, লামাঃ
মরহুম আলহাজ্ব মোঃ আলী মিয়া ২০১০ সালের ২২ আগস্ট চট্রগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে বার্ধক্য জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করে
চেয়ারম্যান পাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে চিরনিদ্রায় কবরস্থ করা হয়।
মরহুমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে কবর জিয়ারত ও বাদে এশা মরহুমের পূত্র মোঃ তৈয়ব আলীর বাস ভবনে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।
তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে সকল আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও গুণগ্রাহীর কাছ থেকে দোয়া এবং রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে।
মরহুম আলহাজ্ব মোঃ আলী মিয়া ১৯২৩ সালের ১লা জানুয়ারী নোয়াখালী জেলার রামগঞ্জ উপজেলাধীন দেবনগর গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন এক খন্দকার পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন।
তাঁর পিতার নাম মোঃ আনছার আলী খন্দকার, মাতার নাম ফুল বানু। ১৯৬২ সালের শেষ দিকে রামগড় মহকুমা প্রশাসক কর্তৃক মোঃ আলী মিয়ার নেতৃত্বে ২ শত উদ্ভাস্তু পরিবারকে বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে প্রেরন করেন। ওই সময় আলী মিয়া পাহাড়ী - বাঙ্গালীদের সমর্থন নিয়ে লামা ইউনিয়ন পরিষদে বিনা প্রতাদ্বন্ধিতায় মেম্বার নির্বাচিত হন।
এছাড়াও তিনি ১৯৭৩ - ১৯৭৪ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বৃহত্তর লামা ইউনিয়ন পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচণে তিনি লামা ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৬ সালে তিনি লামা ফাঁসিয়াখালী সড়ক নির্মাণ কাজ, ১৯৭৯ সালে লামা থানাকে মহকুমায় রুপান্তর ও আশির দশকে লামাকে বিদ্যুতায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
এ ছাড়া আলহাজ্ব মোঃ আলী মিয়া প্রথম লামা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদেও তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সেই সময় তিনি অত্র উপজেলায় অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, পাঞ্জাগানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
এ ছাড়াও তিনি উপজেলার দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি করণের লক্ষ্যে রাস্তা, ঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, ক্লিনিক স্থাপনসহ অত্র উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন করে লামাকে আলোকিত করেন।
মরহুম আলহাজ্ব মোঃ আলী মিয়া ১৯৮৬ সালের ১৫ নভেম্বর লামা পৌরসভা'র টি টি এন্ড ডিসিতে "আলী মিয়া কলেজ" নাম করণ ও প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে উক্ত কলেজ এর বহুতল ভবন নির্মাণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং কলেজে যুগ উপযোগী, শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকারী করণ করার লক্ষ্যে নাম পরিবর্তন করে মাতামুহুরী ডিগ্রী কলেজ নাম করণ করা হয়।
পরর্তীতে উক্ত কলেজ এর ভবন লামা পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড লাইনঝিরি এলাকায় স্থানান্তরীত করা হয়। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন মরহুম মোঃ আশরাফুল ইসলাম।
বর্তমানে সরকারী মাতামুহুরী কলেজ নামে শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠ দান অব্যাহত রয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি ৪ স্ত্রী, ১০ ছেলে, ১১ মেয়ে সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান।